কাজী নজরুল ইসলাম ( ১৮৯৯ - ১৯৭৬ ) / Kazi Nazrul Islam 2023
তার ডাকনাম দুখু মিয়া।
কাজী নজরুল ইসলাম এর পিতার নাম ছিল কাজী ফকির আহমদ এবং মাতার নাম ছিল জাহেদা খাতুন। Kazi Nazrul Islam father's name and mother's name
পিতা ছিলেন চুরুলিয়ার সুফি সাধকের মাজারের খাদেম এবং ওই মসজিদের ইমাম। ১৯০৭ সালের নজরুলের পিতার মৃত্যু হলে পরিবারের নেমে আসে আর্থিক অনটন। Kazi Nazrul Islam summary
নজরুল ১৯০৯ সালে নিম্ন প্রাইমারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং এর মন্তব্যে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। ১২ বছর বয়সে নজরুল লেটো গানে যোগ দেন। পরে তার দুরন্তপনা স্বভাব দেখে গ্রামের লোকজন তাকে রানীগঞ্জের শিয়ারশোল রাজ স্কুলে ভর্তি করে দেন। Kazi Nazrul Islam status
সপ্তম শ্রেণীতে ওঠার কিছুদিন পর তিনি স্কুল ও বাড়িতে ত্যাগ করেন। ১৪ বছর বয়সে আসানসোলের একটি রুটির দোকানে বেকার বয় হিসেবে পাঁচ টাকা বেতনে চাকরি নেন। সেখানে কাজী রফিজ উদ্দিন নামক একজন দারোগা তার গান শুনে মুগ্ধ হয়ে তাকে ময়মনসিংহের ত্রিশালের দরিরামপুর স্কুলের সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন। Kazi Nazrul Islam poem
১৯১৪ সালে স্কুল পলায়ন করে রানীগঞ্জে চলে আসেন। আবার নজরুল শিয়ারশোল স্কুলে অষ্টম শ্রেণীতে ভর্তি হন। সেখানে তিনি মাসিক সাত টাকা করে বৃত্তি পেতেন। Kazi Nazrul Islam ukti
১৯১৭ সালের নজরুল প্রি টেস্ট চলাকালে ৪৯ নম্বর বাঙালি পল্টনের সৈনিক হিসেবে যোগদান করেন।
১৯২০ সালের করাচি ত্যাগ করে কলকাতায় আগমন করেন। ১৯২০ সালের নজরুল ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে যোগদান করেন। Kazi Nazrul Islam birthday
১৯২২ সালে তার "অগ্নিবীণা " কাব্যের "বিদ্রোহী" কবিতা সাপ্তাহিক বিজলি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। ১৯২২ সালে ধুমকেতু পত্রিকায় নজরুলের "আনন্দময়ীর আগমনে" কবিতা প্রকাশিত হলে তাকে কারাবন্দি করা হয়। Kazi Nazrul Islam song
তাকে বিদ্রোহী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করা হয় এবং এক বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। হুগলি জেলে থাকাকালীন কয়েদিদের উপর জেল কর্তৃপক্ষের মিথ্যাচারের প্রতিবাদে অনশন পালন করেন। রবীন্দ্রনাথ চিত্তরঞ্জন দাশের অনুরোধে অনশন ভঙ্গ করেন। এ সময় রবীন্দ্রনাথ তাকে "বসন্তকুমারী " নাটক উৎসর্গ করেন।
১৯২৩ সালের ১৫ অক্টোবর নজরুল জেল থেকে মুক্তি পান। ১৯২১ সালের বাংলা ১৩২৮ বঙ্গাব্দের ৩রা আষাঢ় নজরুলের সাথে কুমিল্লার দৌলতপুরের মুন্সী আব্দুল খালেকের কন্যা সৈয়দা খাতুন এর বিয়ে ঠিক হয়। কিন্তু বিয়ের দিনেই নজরুল বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে যান। পরে ১৯২৪ সালে নজরুল কুমিল্লার বিরজা সুন্দরীর জা- এর কন্যা আশালতা সেনগুপ্তকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তার নাম দেন প্রমিলা সেনগুপ্তা। Kazi Nazrul Islam wife
১৯২৫ সালে নজরুল কংগ্রেসের ফরিদপুর সম্মেলনে যোগদান করেন। ১৯৩০ সালে নজরুলের ৪ বছরের শিশু পুত্র বুলবুলের মৃত্যু হয়।
১৯৩০ সালের নজরুল "প্রলয়শিখা " কাব্যের জন্য ছয় মাসের কারাদণ্ড ভোগ করেন। ১৯৪২ সালের নজরুল পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত হন। পরে তিনি বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেন। Kazi Nazrul Islam bron
১৯৭২ সালের ২৪ মে নজরুলকে রাষ্ট্রীয় অতিথি হিসেবে কলকাতা থেকে ঢাকায় আনা হয় এবং ওই বছরই তাকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেওয়া হয়। কবি নজরুল ১৯৪৫ সালে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে "পদ্মভূষণ" পদক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জগত্তারিনী নিয়ে স্বর্ণপদক লাভ করেন।
১৯৬৮ সালে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট ডিগ্রী এবং ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি.লিট ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৬ সালে একুশে পদক লাভ করেন। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট বাংলা ১৩৮৩ বঙ্গাব্দের ১২ ভাদ্র কাজী নজরুল ইসলাম ঢাকার পি.জি. হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। Kazi Nazrul Islam death
কাব্যগ্রন্থ: নজরুলের কাব্যগ্রন্থের সংখ্যা ২২ টি। সেগুলো হলো- অগ্নিবীণা (১৯২২), বিষের বাঁশি (১৯২৪ ), ভাঙার গান (১৯২৪), সাম্যবাদী (১৯২৫), সর্বহারা (১৯২৬), ফণীমনসা (১৯২৭), জিঞ্জির (১৯২৮), সন্ধ্যা (১৯২৯), প্রলয় শিখা (১৯৩০), দোলনচাঁপা (১৯২৩), ছায়ানট (১৯২৪), পূবের হাওয়া (১৯২৫), চক্রবাক (১৯২৯)।
নাটক: ঝিলিমিলি (১৯৩০), আলেয়া, মধুমালা (১৯৫৯)।
উপন্যাস: বাঁধন হারা (১৯২৭), মৃত্যু ক্ষুধা (১৯৩০), কুহেলিকা (১৯৩১)।
গল্পগ্রন্থ: ব্যথার দান (১৯২২), রিক্তের বেদন (১৯২৫), শিউলি মালা (১৯৩১)।
প্রবন্ধ গ্রন্থ: যুগবাণী (১৯২২), রাজবন্দির জবানবন্দী (১৯২৩), দুদিনের যাত্রী (১৯২৬), রুদ্র মঙ্গল।
গানের সংকলন: বুলবুল (১৯৫২), চোখের চাতক (১৯২৯), চন্দ্রবিন্দু (১৯৪৬ ), নজরুল গীতিকা (১৯৩০), নজরুল স্বরলিপি সুরসাফি, জুলফিকার, বন গীতি, গুলবাগিচা, সুর মুকুর, গানের মালা।
পত্রিকা: দৈনিক নবযুগ, লাঙল, ধুমকেতু।
চলচ্চিত্র: ধুব, পাতালপুরি, গ্রহের ফোর, গোরা, সাপুড়ে, চৌরাঙ্গি, বিদ্যাপতি।
ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত গ্রন্থ: অগ্নিবীণা, বিষের বাঁশি, ভাঙার গান, প্রনয়শিখা, যুগবাণী এবং চন্দ্রবিন্দু।
নজরুল ছিলেন বাংলা রাস সংগীতের রচয়িতা। অগ্নিবীণা কাব্যের কবিতার সংখ্যা ১২ টি। যেমন: প্রলয়োল্লাস, বিদ্রোহী, ধুমকেতু, আগমনী, কামাল পাশা, আনোয়ার, খেয়া পারের তরণী, রনভেরি, সাত-ইল-আরব, কোরবানি, মহররম।
চৈতি হাওয়া কবিতাটি নজরুলের ছায়ানট কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত। এটি একটি প্রেম বিরহের কবিতা।
নজরুলের প্রথম লেখা = বাউন্ডেলের আত্মকাহিনী।
নজরুলের প্রথম কবিতা = মুক্ত।
প্রথম কাব্যগ্রন্থ = অগ্নিবীণা।