জীবনানন্দ দাশ/ Jibanananda Das summary 2023 banalata sen
তার পিতার নাম সত্যানন্দ দাস এবং মাতার নাম কুসুমকুমারী দাস। কবি জীবনানন্দ দাশের পিতা পেশায় শিক্ষক ছিলেন । তিনি বজ্র মোহন স্কুলের শিক্ষক ছিলেন। তার মাতা ছিলেন সে যুগের একজন মহিলা কবি। Jibanananda Das father's and mother's name
জীবনানন্দ দাশ ১৯১৫ সালের বরিশালের বজ্র মোহন স্কুল থেকে মেট্রিক পাস এবং ১৯১৭ সালে বজ্রমোহন কলেজ থেকে আই এ পাস করেন। Jibanananda Das jonmo tarik
তিনি ১৯১৯ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্ট সি কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে বি.এ অনার্স এবং ১৯২১ সালে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। Jibanananda Das status
কর্মজীবনের তিনি কলকাতা সিটি কলেজ, বাগেরহাট সরকারি কলেজ, দিল্লির রামযশ কলেজ, বরিশাল বি.এম কলেজ এবং ভারতের খড়গপুর, বড়িষ্য ও হাওড়া গার্লস কলেজে অধ্যাপনা করেন। Jibanananda Das bron
কবি জীবনানন্দ দাশ ১৯২৯ সালের লাবণ্য দাশগুপ্তের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। Jibanananda Das wife
কবি ১৯৫৪ সালের ২২ অক্টোবর কলকাতায় এক ট্রাম দুর্ঘটনায় নিহত হন। Jibanananda Das death
সাহিত্য সাধনা: ত্রিশোত্তোর কবি জীবনানন্দ দাশ "তিমির হননের কবি " ধূসর কবি, নির্জনতার কবি, রোমান্টিক কবি, রূপসী বাংলার কবি হিসেবে সমাধিক পরিচিত।
তার কাব্য সাধনার প্রেরণা হিসেবে ছিল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম এবং সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত। Jibanananda Das poem
কিন্তু বাংলা কবিতায় রচনায় তার কবিতা মৌলিকতায় ভরপুর। তিনি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের একজন শ্রেষ্ঠ কবি। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যকে জীবনানন্দ দাশ অন্ত্যত সুন্দরভাবে তার কবিতায় তুলে ধরেন। প্রকৃতি তার কবিতায় একাধার হয়ে ওঠে। তারপরও কবির কবিতায় নাগরিক জীবনের হতাশা, বিষাদ নিঃসঙ্গতা ও সংশয়ের ছবি বিশেষভাবে ফুটে ওঠে। জীবনানন্দ দাশের নিসর্গবিষয়ক কবিতাগুলো ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে বাঙ্গালী মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা হিসেবে কাজ করে। Jibanananda Das ukti
সাহিত্য কর্ম :
কাব্যগ্রন্থ: ঝরা পালক (১৯২৮), ধূসর পান্ডুলিপি (১৯৩৬), বনলতা সেন (১৯৪২), মহা পৃথিবী (১৯৪৪), সাতটি তারার তিমি (১৯৪৮), রূপসী বাংলা (১৯৫৭), বেলা অবেলা কালবেলা (১৯৬১), জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতা।
প্রবন্ধ গ্রন্থ: কবিতার কথা (১৯৫৬)।
উপন্যাস : মাল্যবান (১৯৭৩), সুতীর্থ (১৯৭৪)।
জীবনানন্দ দাশের গল্প সংকলনের নাম: "জীবনানন্দ দাশের গল্প " সম্পাদনা সুকুমার ঘোষ ও সুবিনয় মুস্তাফি
কবি জীবনানন্দ দাশের বিখ্যাত কবিতা হচ্ছে বনলতা সেন। Jibanananda Das famous poems
বনলতা সেন কবিতার সার -সংক্ষেপ: যুগ যুগান্তর ধরে মানুষ শান্তির জন্য সুদীর্ঘ পথ পরিভ্রমণ করে বর্তমানে এসে পৌঁছেছে। মানুষের চলার পথ সহজ ছিল না। কন্টকাময় ভরা এ পথ ছিল কখনো প্রশস্ত কখনো সংকীর্ণ। জীবনে পাওয়ার আনন্দ এবং হারানোর বেদনা আছে। শান্তির খোঁজে ইতিহাস সচেতন কবি অন্তরের চোখ মেলে অতীতের দিকে তাকিয়েছেন। কিন্তু শান্তির আশ্বাস বানীটুকু তিনি পাননি। Jibanananda Das song
হাজার বছরের পথ পরিক্রমায় কবি বিম্বিসার ও অশোকের ধূসর জগতে ঘুরে বেড়িয়েছেন। সিংহল সমুদ্র থেকে মালয় সাগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এর জলরাশি কবি উপভোগ করেছেন। কিন্তু কবি মনের ক্লান্তি, অবসন্নতা কোনমতে দূর হচ্ছে না। না পাওয়ার বেদনায় কবির উতলা মন যখন বেদনায় জর্জরিত ঠিক তখনই জীবনের সমুদ্র সফেন পাড়ি দিয়ে শান্তির প্রদীপ জ্বালিয়ে হাজির হয়েছেন নাটোরের বনলতা সেনের কাছে। banalata sen poem in bengali
বনলতা সেন কবির মানস প্রতিমা। তার রূপ ঐশ্বর্যে কবি মুগ্ধ। তার মুখ ও চুলের সৌন্দর্য কবি বিমুগ্ধ নয়নে উপলব্ধি করেছেন। তাই তার চুলকে বিদিশার অন্ধকারের সাথে এবং মুখ কে শ্রাবন্তির কারুকাজের সাথে তুলনা করেছেন। বনবাসীনি সৌন্দর্যময়ী এ নারীর সান্নিধ্য লাভ কবির কাছে রহস্য। তার চোখেই যে শান্তির আশ্বাসবাণী পেয়েছেন তা কবিকে নতুন দিকনির্দেশনা দিয়েছে। নতুন পথের সন্ধান দিয়েছে এবং পরম মমতায় কবিকে প্রশ্ন করেছেন - "এতদিন কোথায় ছিলেন"?
বস্তুত এ নারী কবির আরাধ্য সাধনার ধন। প্রভাতে রবির কিরণে আলোকিত দিনের যাত্রা শুরু হয়, আর শিশিরের শব্দের মত সন্ধ্যা চারিদিকে ঘনিয়ে আসে। পরিভ্রমণরত পাখিরা নীরের সন্ধানে ব্যস্ত। চিল ডানার রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে দিয়ে ঘরে ফেরে। পৃথিবীর সব রং মুছে যায়। চারিদিকে নামে ধূসরতা। জোনাকির আলো মিটমিট করে জলে। স্তব্ধ হয়ে যায় নদীর তীরের কলগঞ্জন। সব মিলিয়ে রচিত হয় এক মোহনীয় স্বপ্নময় ভুবন। এ ভুবনের এক প্রান্তে নাটোরে এসে বনবাসিনী, সৌন্দর্যের প্রসারিনি বনলতা সেনকে খুঁজে পান কবি। তার ডাগর চোখের চাহনি কবির দুই চোখে শান্তির পরশ বুলিয়ে দেয়। কবির ক্লান্ত মনের অবসন্নতা দূর হয়।
তখন তার মুখোমুখি বসেই কবি খুঁজে পান শান্তির আশ্বাস বাণী। মানস প্রিয়ার এহেন সান্নিধ্য প্রত্যেক পুরুষ সত্তা কামনা করেন। নীরের সন্ধানে ভ্রমণরত পাখিরা যখন বাসা খুঁজে পায় এবং হাল ভাঙা নাবিক দিশেহারা হয়ে যখন দারুচিনি দ্বীপের ভিতরে সবুজ ঘাস দেখে আনন্দিত হয়, কবি নাটোরের বনলতা সেনের সান্নিধ্য পেয়ে তদ্রূপ আনন্দিত ও আহ্লাদিত। তার উপস্থিতি টাই কবিকে করে তুলে মহিমান্বিত।